হার্ট অপারেশনের বারো দিনেই সুস্থ নূপুর
পাবনার ১২ বছরের নূপুরের হৃদযন্ত্রে জন্মগত একটি ছিদ্র ছিল। এর চিকিৎসায় ১৯ আগস্ট তাকে ভর্তি করা হয় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে। গত ২৫ আগস্ট হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও আবাসিক সার্জন ডা. আশ্রাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল মিনিমালি ইনভাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি পদ্ধতিতে নূপুরের হৃদযন্ত্রে সফল অস্ত্রপচার করেন। অস্ত্রপচারের পাঁচ দিনের দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে নূপুর।
শাকিল হাসান:
হার্টের অস্ত্রোপচারের বারো দিনের মধ্যেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে নূপুর। নূপুরের হৃৎপিণ্ডে জন্মগত একটি ছিদ্রের অপারেশন করা হয়েছিল। বড় ধরনের কাঁটাছেড়া না করে মাত্র দুই ইঞ্চি ছিদ্র করে হৃদপিণ্ডের এই অপারেশনকে বলা হয় মিনিমালি ইনভাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি। বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতির অপারেশন করেন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক এবং আবাসিক সার্জন ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম এবং তার দল।
গত ৫ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে আসে নূপুর। দুই ইঞ্চি ছিদ্রে দেয়া ব্যান্ডেজ খুলে দেন ডা. সিয়াম। ওপেন হার্ট সার্জারির ক্ষেত্রে কাটাস্থান শুকাতে সময় লাগে কিন্তু এ ধরনের সার্জারিতে মাত্র দেড় সপ্তাহেই পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। এ সময় খুবই হাস্যজ্বল দেখাচ্ছিল নূপুরকে।
এখন কেমন বোধ হচ্ছে জানতে চাইলে নূপুর জানায়, অপারেশনের পর তেমন ব্যথা হয়নি। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টা পর থেকে আমি খাবার খেয়েছি। ডাক্তার আঙ্কেল আমাকে আইসক্রিম খাইয়েছেন, গল্প করেছেন।
নূপুরের মা বলছিলেন, হার্টের অপরাশনের রোগি এতো দ্রুত পুরোপুরি সেরে উঠবে আমরা কল্পনাও করিনি।
পাবনার ১২ বছরের নূপুরের হৃদযন্ত্রে জন্মগত একটি ছিদ্র ছিল। এর চিকিৎসায় ১৯ আগস্ট তাকে ভর্তি করা হয় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে। গত ২৫ আগস্ট হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও আবাসিক সার্জন ডা. আশ্রাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল মিনিমালি ইনভাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি পদ্ধতিতে নূপুরের হৃদযন্ত্রে সফল অস্ত্রপচার করেন। অস্ত্রপচারের পাঁচ দিনের দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে নূপুর।
এই অপারেশনের শুরুর গল্পটাও দারুণ- একজন চিকিৎসকের জেদের গল্প। জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও আবাসিক সার্জন ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম ভারতে একটি কনফারেন্সে গিয়ে এই ধরনের অপারেশনের বিষয়ে জানেন। পরে আবারো ভারতে গিয়ে এই পদ্ধতির অপারেশন নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন।
মিনিমালি ইনভাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি এর আগে সরকারি কোনো হাসপাতালে হয়নি। তাই এমন অপারেশনে ঝুঁকি ছিল। চিকিৎসক, নার্সদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে। মাত্র ছয় মাসেই প্রস্তুত করা হয়েছে পুরো টিম।
এরই মধ্যে ডা. সিয়ামের নেতৃত্বে মিনিমালি ইনভাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি পদ্ধতিতে হয়েছে দ্বিতীয় অপারেশন। এবার বুকের পাজরের হাড় না কেটে করা হয়েছে বাইপাস সার্জারি। মৌলভিবাজারের চল্লিশ বছর বয়সী মোহাম্মদ মতিন হার্টের দুইটা ব্লক নিয়ে ২৫ শে আগস্ট হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সার্জারি ইউনিট-০৯ এ ভর্তি হন। ২ সেপ্টেম্বর MICS-MIDCAB অপারেশন করে দুটো গ্রাফ্ট দেন চিকিৎসকরা। অপারেশন এর পর চতুর্থ দিনের মধ্যেই মোহাম্মদ মতিন বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
সোর্সঃ যমুনা টেলিভিশন